Blog post

Sunday, June 7, 2015

Char Kukuri Mukuri will Bird Watch Centre (চর কুকরি-মুকরিতে হচ্ছে বার্ড ওয়াচ সেন্টার )

Char Kukuri Mukuri

ভোলা শীত এলেইআসতে শুরু করে বছরও সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ উত্তরের শীতপ্রধান দেশ মঙ্গোলিয়া, নেপাল জিনজিয়াং থেকে আসা হাজার হাজার অতিথি পাখির কলকাকলিতে ভোলাসহ উপকূলের চরাঞ্চলগুলো সেজেছে ভিন্ন রূপে শীতের সকাল-বিকাল অতিথি পাখির কিচিরমিচির, উড়ে বেড়ানো আর জলকেলি ছুঁয়ে যায় মানুষের মন
উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন জানান, শীতে উপকূলীয় চরগুলোতে আসা পাখির বিচরণক্ষেত্রগুলো রক্ষার জন্য বন বিভাগ সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে ইতিমধ্যে উপকূলে আসা পর্যটকদের পাখি দেখার জন্য সরকার ভোলার চর কুকরি-মুকরিতে একটি বার্ড ওয়াচ সেন্টার তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছেন
পাখি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ৮০ দশকে ভোলায় আসা অতিথি পাখির প্রজাতি ছিল প্রায় ৩শ৫০ কিন্তু বর্তমানে এর সংখ্যা কমে ৬৫ প্রজাতিতে চলে এসেছে
গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকা থেকে ভোলায় পাখিশুমারি করতে আসা বন্যপ্রাণী গবেষক পাখি পর্যবেক্ষক সামিউল মোহসেনিন জানান, গত বছরের শীত মৌসূমে ভোলায় ৫০ হাজার
৪০টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি গণনা করা হয়েছিল এর মধ্যে ৬৬ প্রজাতির পাখির সন্ধান মিলেছে যার মধ্যে জলচর পাখি ছিল ৬৫ প্রজাতির সৈকতে পাখির সন্ধান মিলেছে চার হাজার ৪শ২১টি যার মধ্যে চেগা, জিরিয়া, বাটান ছিল উল্লেখযোগ্য বুনোহাঁসের সন্ধান মিলেছে ১২ হাজার ৮শ৭৩টির এর মধ্যে সিঁথিহাঁস, বেবি, চকাচকি, রাজহাঁস প্রমূখ উল্লেখযোগ্য
অন্যদিকে বছর শীত মৌসূমে ৬৫ প্রজাতির ৫৬ হাজার ৫শ২২টি জলচর পাখি দেখা গেছে এর মধ্যে পাঁচ প্রজাতির বিপন্নপ্রায় জলচর পাখি দেখা গেছে এর মধ্যে মহাবিপন্ন চামুচঠুঁটো বাটান ৫টি বিপন্ন নর্ড ম্যানের সবুজ পা ২টি সংকটাপন্ন দেশি গাঙচষা ১৩ হাজার ৪৩টি রয়েছে এছাড়া প্রায় সংকটাপন্ন প্রজাতির মধ্যে নদীয়া পানচিল ৬টি, এশীয় ডউইচার ২৮টি, কালা লেজ জৌরালি হাজার ৪শ২৭টি, কালামাথা কাস্তেচরা ৪শ৫৫টি, ইউরেশীয় গুলিন্দা ৩শ১৩টি ইউরেশীয় গুলিন্দা ৩শ৩১টি
১০
প্রজাতির বুনোহাঁসের সন্ধান মিলেছে ১৪ হাজার ৭শ৯৬টির
তিনি উপকূলের ২০টি চর পর্যবেক্ষণ করেছেন এর মধ্যে মাঝের চর, পাতার চর, দমার চর, চর শাহজালাল, কালকিনির চর, চর কুকরি-মুকরি, চর পিয়াল, চর পাতিলা, আন্ডার চর, সোনার চর, চর মনতাজ, টেগরার চর, সালুর চর, ডুবচর বঙ্গের চরে বেশি সংখ্যক পাখি দেখা গেছে পাখি গণনাকালে তিনি মাঝের চর, বঙ্গের চর সালুর চরে পাখি শিকারের প্রমাণ নমুনা দেখতে পান
পাখিবিশেষজ্ঞ সামিউল মোহসেনিন বলেন, বেশির ভাগ শিকারিরাই ভোলার বাইরে থেকে আসে এবং শখের বশে পাখি শিকার করে বলে স্থানীয়রা তাঁর কাছে অভিযোগ করেছে তিনি বলেন, পরিযায়ি পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে
১৯৮২
সালে বাংলাদেশে প্রথম পাখিশুমারি শুরু করেন প্রকৃতি পাখিবিশেষজ্ঞ . এস এম রশিদ তিনি বলেন, ৮০ দশকে ভোলায় আসা অতিথি পাখির প্রজাতির সংখ্যা যেখানে ছিল ৩শ৫০, তা এখন কমে ৬৫ প্রজাতিতে এসে ঠেকেছে
পাখিপর্যবেক্ষক এম মুহিত জানান, ভোলার যেসব চরে জনবসতি ছিল না এখন সেখানে মানুষের চলাচল বেড়েছে ফলে পাখিদের প্রজননক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে বাড়ছে গরু-মহিষ জেলেদের অবাধ বিচরণ এছাড়াও মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীবেষ্টিত এসব চরাঞ্চলে গাছের সবুজ বেষ্টনী একের পর এক উজাড় হচ্ছে কিছু অসৎ বনরক্ষীর সহযোগিতায় দিনের আলোতে প্রকাশ্যেই বনের গাছ লুট করছে দস্যুরা ফলে পাখিরা এখন ওই সব চরগুলোকে তাদের নিরাপদ স্থান বলে মনে করছে না
এছাড়াও নদীগুলোতে জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার করছে কারণে একদিকে যেমন পাখিদের খাদ্যোপযোগী মাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে অন্যদিকে জালে জড়িয়ে অনেক পাখিও প্রাণ হারাচ্ছে তিনি বলেন, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরা প্রতিহত না করা গেলে ওই সব মাছের বংশ এক সময় বিলুপ্ত হয়ে যাবে
ব্যাপারে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি নিয়াজ আবদুর রহমান বলেন, পাখিদের আবাসস্থল এখন লোকালয়ে পরিণত হয়েছে পাখিদের কোলাহলমুক্ত বিচরণক্ষেত্রগুলো এখন প্রভাবশালীদের দখলে দিন দিন মানুষ বাড়ছে মাছের চাহিদা বাড়ছে তাই এখন জেলেদের সংখ্যাও বেশি জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছে নদীতে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে ফলে নদীর প্রাণবৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে সময় তিনি বলেন, নদীর প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে

No comments:

Post a Comment

 
Blogger Templates